Report Now

Empowering Communities for Inclusive Disaster Resilience: A CSO-Media Partnership to Protect Safety of Women and Girls.

প্রকল্প গ্রহনের পেক্ষাপট/যৌক্তিকথাঃ

জার্মান ওয়াচ-এ প্রকাশিত গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স ২০২১ অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে ২০০০-২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ৭তম স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় প্রতি বছরই বন্যা হয়, যা মানুষের জীবনকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে। বর্তমান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের ২৮টি জেলাকে বন্যাকবলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় অর্ধ মিলিয়ন মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে, যার মধ্যে শিশু, কিশোরী, নারী, প্রতিবন্ধী এবং বয়স্করা বিশেষভাবে ঝুঁকির মধ্যে থাকে। প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয় কুড়িগ্রাম জেলার মানুষ। বিশুদ্ধ খাবার পানি, খাবার, নিরাপদ আশ্রয়, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার অভাবে বন্যা কবলিত কুড়িগ্রাম জেলার মানুষ দূর্ভোগের স্বীকার হয়।

বন্যার সময় জেলার নয়টি উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। কেউ কেউ বেশ কয়েকটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়, অন্যরা রাস্তার পাশে অস্থায়ী তাঁবুতে স্থান নেয় এবং তারা কোথায়/কিভাবে সহায়তা পাবে তার সঠিক তথ্য পায় না।

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী গত বছরের জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত ৮১ জন সাংবাদিক তাদের পেশাগত কাজে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি এবং বাধার সম্মুখীন হয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে লাইট হাউজ সিএসও-মিডিয়া পার্টনারশিপ গড়েতুলে দূর্যোগকবলিত এলাকার মানুষের জন্য অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে লাইট হাউজ, দৈনিক আজকালের খবর (একটি মিডিয়া পাটনার), অন্যান্য স্থানীয় মিডিয়া ও স্টেকহোল্ডার নিয়ে প্রকল্পের লক্ষ্য অর্জনে একসাথে কাজ করবে।

প্রকল্পের মেয়াদকালঃ

অক্টোবর ২০২৪ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত (এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক অনুমেদিত)।

প্রকল্প এলাকাঃ

কুড়িগ্রাম জেলার ০৫টি উপজেলা (কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারী, রাজিবপুর)

দাতা সংস্থাঃ

ইইউ / ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড / আটিকেল ১৯

মিডিয়া সহযোগীঃ

দৈনিক আজকালের খবর।

প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ

এই প্রকল্পটি দূর্যোগ প্রবণ কুড়িগ্রাম জেলার ০৫টি উপজেলায় দারিদ্রপীড়িত এবং ঝুঁকিপ্রবণ এলাকায় বসবাসরত নারী, কিশোরী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলা করার জন্য (মোবাইল অ্যাপ, পোষ্টার, লিফলেট, ফায়াস, অনলাইন প্লাটফর্ম) বিভিন্ন প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সচেতন করে তোেলা। নিবেদিত প্রাণ স্বেচ্ছাসেবক তৈরী করা এবং তাদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা। স্থানীয় পর্যায়ের (ইউনিয়ন, উপজেলা) দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কার্যকর ও তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। জেলা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের জেন্ডার সংবেদনশীল ও দূর্যোগ সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা, যাতে করে মিডিয়া এবং সিএসও একসাথে অনুকুল পরিবেশে অবাধে প্রতিবেদন করতে পারে। এই সব লক্ষ্য অর্জনে প্রকল্পটি যে সকল কাজ করবে-

  • স্থানীয় পর্যায়ে ৭০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করে তাদের মাধ্যমে দূর্যোগ প্রবন এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
  • ৪০টি দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি কার্যকর করে তাদেরকে দূর্যোগ প্রবণ এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন সহায়তা করবে।
  • ৩৫০ জন নারী ও কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে কাউন্সিলিং প্রদান এবং দূর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
  • মোবাইল অ্যাপ, পোষ্টার, লিফলেট, ফায়ার্স, অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি এরং এর মাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রদানের উদ্দ্যেগ গ্রহন করা।
  • ৩৫ জন জাতীয় পর্যায়ের সাংবাদিকদের নিয়ে জেন্ডার সংবেদনশীল ও দূর্যোগ সম্পর্কিত বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করা।
  • ৯০ জন জেলা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের জেন্ডার সংবেদনশীল ও দূর্যোগ সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
  • প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কসপ, সচেতনকরণ সভা ও অনলাইন/সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে ৭৫,০০০ হাজার দূর্যোগপ্রবণ এলাকার দারিদ্রপীরিত এবং ঝুঁকিপ্রবণ নারী, কিশোরী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে দূর্যোগকালীন সময়ে জেন্ডার সহিংসতা হ্রাসে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান চালানো হবে।
  • যুব ও কিশোরী স্বেচ্ছাসেবীদের সিটিজেন জার্নালিজম-এর উপর ওরিয়েন্টেশন প্রদান।
  • দূর্যোগ ব্যবস্থাপনার পলিসি বাস্তবায়ন বিষয়ক টেলিভিশন সংলাপের আয়োজন করা।
  • দূর্যোগকালীণ সময়ের নারী, কিশোর-কিশোরী এবং প্রতিবন্ধীদের সামগ্রীক পরিস্থিতির উপর প্রতিবেদনের জন্য নির্বাচিত সাংবাদিকদের ফেলোশীপ প্রদান করা।

জাতীয় পর্যায়ে দূযোর্গকালীল সময়ে জেন্ডার সংবেদনশীল রির্পোটিং বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার লাইট হাউজ কর্তৃক আয়োজিত রাজধানীর মহাখালী হোটেল অবকাশে দূযোর্গকালীণ সময়ে জেন্ডার সংবেদনশীল রিপোর্টিং বিষয়ক জাতীয় পর্যায়ের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

প্রশিক্ষনের উদ্দেশ্য ছিল দূযোর্গকালীণ সময়ে সাংবাদিকগণ দূর্যোগের উপর সঠিক তথ্যচিত্র তুলে ধরতে পারে এবং দূযোর্গকালীণ সময়ে জেন্ডার সংবেদনশীল ও সহিংসতা বিষয়ক রিপোর্ট বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করতে পারে।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব রেজওয়ানুর রহমান, মহাপরিচালক, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিস নাহিদ সুলতানা মল্লিক (যুগ্ম সচিব), পরিচালক (গবেষণা ও প্রশিক্ষণ), দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, মিস সানজিদা ইয়াসমিন, উপসচিব, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়, জনাব সৈয়দ আশরাফ উল ইসলাম, কমিউনিকেশন ও মিডিয়া স্পেশালিষ্ট, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, জনাব ফারুক আহমেদ তালুকদার, সম্পাদক, দৈনিক আজকালের খবর এবং লাইট হাউজের নির্বাহী প্রধান জনাব মোঃ হারুন অর রশিদ।

দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব রেজওয়ানুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব নয়। প্রকৃতি তার নিজের খেয়ালে চলে। তাই প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রতিরোধ করার শক্তি যেমন মানুষের হাতে নেই তেমনি জানা নেই আত্মরক্ষার কৌশলও। তবে দূর্যোগ মোকাবিলা করার প্রস্তুতি ও সর্তকতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অনেক ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এ জন্য গণসচেতনতা যেমন দরকার, তেমনি দরকার ঝড়-জলচ্ছাস ও বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো অবকাঠামো নির্মাণ, উঁচু বাঁধ তৈরি। একই সঙ্গে টেকসই দূর্যোগ মোকাবিলা অনেকটাই নির্ভর করছে আমাদের কর্মকান্ড ও প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধানের ওপর কতটা জোর দিচ্ছি।

Translate »